রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জাতীয় এক্যমত কমিশনের পাঠানো ১৬৬টি প্রস্তাবের ভেতর ১১৩টির সঙ্গে একমত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনপিসি)। এছাড়া ২৯টি প্রস্তাবের সঙ্গে আংশিক একমত ও ২২টি প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে সদ্য গঠিত নতুন রাজনৈতিক দলটি।
রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান এনপিসির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার। এর আগে সেখানে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের কাছে সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত জমা দেয় দলটি।
সারোয়ার তুষার বলেন, জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের পাঠান ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে আমরা ১১৩টি প্রস্তাবের সঙ্গে পুরোপুরি একমত হয়েছি। ২৯টি প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা আংশিক একমত হয়েছি। আর ২২টি প্রস্তাবের ব্যাপারে আমরা একমত হতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, অনেকগুলো প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হওয়ার পরও আমরা মন্তব্য করেছি। আংশিক একমত যেসব প্রস্তাবের সঙ্গে হয়েছি সেগুলো পাশে মতামত জানিয়েছি। যেগুলোর সঙ্গে একমত হয়নি, সেগুলোর পাশে কেন একমত হয়নি সেটা জানিয়েছি।
সংস্কার প্রস্তাবের ওপর জানানো মতামতের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রস্তাবে রাষ্ট্রভাষা বাংলার কথা বলেছেন। আমাদের তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা বলেছি এটা দাপ্তরিক ভাষা হওয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকরা বাংলাদেশি হিসেবে পরিচিত হবেন। আমরা এটার সঙ্গে একমত হয়েছি। পাশাপাশি আমরা মন্তব্য করেছি, বিভিন্ন যে জাতিসত্তা আছে তাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি থাকতে হবে।
তবে এনপিসি সবচেয়ে বেশি দ্বিমত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়ে করেছে বলে জানিয়েছেন সারোয়ার তুষার। তিনি বলেন, তাদের ১২টি প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা একমত হয়েছি, ১১টি প্রস্তাবের সাথে একমদ হতে পারিনি, ৩টির সঙ্গে আংশিক একমত হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, একটি বিষয়ে আমরা ঘোরতর বিরোধীতা করেছি। সেটা হচ্ছে প্রাদেশিক শাসন ব্যবস্থা। আমরা বলেছি, এই ধারণা বিপদজ্জনক। এটা নিয়ে আলোচনারই দরকার নেই। এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না।
সংস্কার প্রস্তাবের ওপর মতামতের পাশাপাশি এনপিসি জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের কাছে তিনটি বিষয়ে জানতে চেয়েছে।
সারোয়ার তুষার বলেন, জুলাই চার্টার হবে ঐক্যমতের ভিত্তিতে। অর্থাৎ, সুপারিশের যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে তার ওপর ভিত্তি করে জুলাই চার্টার হবে। আমরা বুঝতে পারছি ১৬৬টি সুপারিশমালার সবগুলো জুলাই চার্টারে থাকবে না। তাহলে গুরুত্বপূর্ণ যেসব সুপারিশ জুলাই চার্টারে থাকবে না সেগুলোর ব্যাপারে কমিশন কি ভাবছে সেটা আমরা জানতে চেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, সরকার ১১১টি সংস্কার প্রস্তাব কোনো ধরনের সংলাপ ছাড়া বাস্তবায়নের কথা ভাবছে। এই ১১১টি মধ্যে অনেকগুলো সংস্কার আছে, যেগুলো আমাদের কাছে মনে হয়েছে আলোচনা করার প্রয়োজন আছে। এগুলো কি প্রক্রিয়ায় নির্ধারণ করা হলো এটা আমরা জানতে চেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, খুবই গুরত্বপূর্ণ দুটি কমিশনের সুপারিশ আমাদের কাছে পাঠানো হয়নি। একটি হলো পুলিশ সংস্কার কমিশন, আরেকটি হলো স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। এগুলোর ব্যাপারে আমরা আমাদের মতামত জানাতে পারিনি। এ ব্যাপারে ঐক্যমত কমিশনের অবস্থান আমরা জানতে চেয়েছি।