রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার গড়াই নদীতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বেশ কয়েকটি ছোট বড় কুমির দেখা যাচ্ছে। এতে করে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
রাজবাড়ী, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার সীমান্তবর্তী গড়াই নদীর রাজবাড়ী পাংশার মোহনঘাট এলাকায় কুমিরের দেখা মেলায় প্রতিদিন সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রায় দুই মাস ধরে এই স্থানে কখনও একটি, আবার কখনও একসঙ্গে একাধিক কুমিরের দেখা মিলেছে। এ অবস্থায় ভয়ে কেউ নদীতে নামতে সাহস পাচ্ছেন না। আগের মতো নদীতে গোসল করা, মাছ ধরা, গরু-মহিষ গোসল না করাতে পেরে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।
সরজমিনে দেখা যায়, নদীর পাড়ে কুমির দেখতে ভিড় করছেন স্থানীয় শিশু-কিশোর, যুবকসহ বৃদ্ধরা। এ সময় কেউ আবার নদীর কিনারে দাঁড়িয়ে গোসল করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল মোল্লা বলেন, এই অঞ্চলে টিউবওয়েলের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় স্থানীয়রা দৈনন্দিন কাজে নদীর পানি ব্যবহার করেন। কিন্তু কুমিরের দেখা পাওয়ার পর থেকে ভয়ে নদীর পানি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
কৃষক মুসা মিয়া বলেন, প্রায় এক মাস ধরে নদীতে কুমির দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু কুমির ধরতে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
শিক্ষার্থী রেবেকা সুলতানা বলেন, আমরা যারা নদীর পাশে বসবাস করছি, তারা নিয়মিত নদীতে গোসল করি। কিন্তু কুমিরের ভয়ে এখন নদীতে কেউ নামছে না।
স্থানীয়রা আরও বলছেন, এই মোহনঘাট রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ কয়েক জেলার বর্ডার এলাকা। এলাকার মানুষ এবং গরু-মহিষ গোসল করানো নানা কাজে আমরা নদীর পানি ব্যবহার করি। হঠাৎ শুনতে পাই এখানে কুমির দেখা যাচ্ছে। পরে একদিন নদীর পাড়ে এসে দেখি দুইটা কুমির ভেসে বেড়াচ্ছে। বর্তমানে আমরা সবাই ভয়ে আছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য তামজিদ হোসেন বলেন, প্রায় দুই মাস ধরে গড়াই নদীতে কুমির ভেসে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। সাধারণত সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে কুমিরগুলো ভেসে ওঠে। তবে কয়েকদিন নদীর পাড়ে ঘুরে কুমিরের দেখা পাইনি।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম আবু দারদা বলেন, নদীতে কুমির দেখা যাওয়ার বিষয়টি জানার পর আমি নিজে কয়েকবার গিয়েছি দেখার জন্য। তবে কুমিরের দেখা পাইনি। পরে স্থানীয় অনেকের মোবাইলে ধারণ করা কুমিরের ভিডিও দেখে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। এ বিষয়ে লিখিতভাবে উপজেলা বন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব খুলনা বা ঢাকা থেকে টিম এনে কুমির ধরার ব্যবস্থা করার জন্য।
তিনি আরও বলেন, কুমির ধরার আগ পর্যন্ত আপাতত সতর্ক থাকতে এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করা হয়েছে।